পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানি ভর্তুকি প্রদান প্রসংগে
সরকার দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দেশে পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন রপ্তানির বিপরীতে ভর্তুকি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ সুবিধা ১ জুলাই, ২০১৬ হতে জাহাজীকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। ভর্তুকি পরিশোধ বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের অনুসরণীয় নির্দেশাবলী নিম্নের অনুচ্ছেদসমূহে বর্ণনা করা হলো:
ভর্তুকির প্রাপক পক্ষ ও প্রাপ্যতার মাত্রা:
বাংলাদেশে উৎপাদিত স্থানীয়ভাবে সংগ্রহকৃত পাটকাঠি থেকে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত কার্বন রপ্তানির ক্ষেত্রে নীট এফওবি মূল্যের ওপর ২০% হারে উৎপাদনকারী-রপ্তানিকারকের ভর্তুকি প্রাপ্য হবে।
রপ্তানি ভর্তুকির আবেদনপত্র দাখিলের শর্তাবলী:
(ক) রপ্তানিকৃত পণ্যের হ্যান্ডেলিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নির্বাহকৃত ব্যয় এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিবহন এবং ফ্রেইট চার্জ পরিশোধজনিত ব্যয়ের বিপরীতে ডব্লিউটিও বিধি অনুযায়ী আলোচ্য ভর্তুকি প্রদেয় হবে।
(খ) রপ্তানি ঋণপত্র/চুক্তিপত্রের আওতায় রপ্তানি পরবর্তী পর্যায়ে প্রণীত দলিলাদি কিংবা ডকুমেন্টারী কালেকশনের মাধ্যমে প্রত্যাবাসিত রপ্তানি আয়ের বিপরীতে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় রপ্তানিকারকগণ রপ্তানি ভর্তুকির জন্য ফরম-ক অনুসারে আবেদনপত্র দাখিল করতে পারবেন। টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসনের শর্তযুক্ত রপ্তানি ঋণপত্র/চুক্তির বিপরীতে রপ্তানির ক্ষেত্রে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিদেশী ক্রেতার যথার্থতা/বিশ্বাসযোগ্যতা, মূল্যের সঠিকতা এবং বাংলাদেশ হতে প্রকৃত রপ্তানির নিমিত্তে টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য প্রত্যাবাসন সম্পর্কে টিটি বার্তার ভাষ্য ও অন্যান্য কাগজপত্রের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। টিটি’র মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ সরাসরি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে (এক্সচেঞ্জ হাউস ব্যতীত) রপ্তানি আদেশ প্রদানকারী বা আমদানিকারক কর্তৃক সম্পনড়ব হতে হবে এবং টিটি বার্তার ভাষ্যে আমদানি সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্র উল্লেখ থাকতে হবে। সকল ক্ষেত্রে ভর্তুকির আবেদনপত্র বিদেশে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নষ্ট্রো হিসাবে রপ্তানি মূল্য আকলনের (রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসনের) তারিখের ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখায় দাখিল করতে হবে।
(গ) রপ্তানির স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি যেমন জাহাজীকরণের প্রমানস্বরূপ বিল অব লেডিং/এয়ারওয়ে বিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট, শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যূকৃত বিল অব এক্সপোর্ট ইত্যাদি দাখিল করতে হবে।
অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা কর্তৃক আবেদনপত্র গ্রহণ, পরীক্ষণ ও পরিশোধ নিষ্পত্তি:
(ক) রপ্তানি ভর্তুকির আবেদন ফরমের বিভিনড়ব অনুচ্ছেদে যে সকল কাগজপত্র, সনদপত্র, প্রত্যয়নপত্রের উল্লেখ আছে ঐগুলো সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ আকারে আবেদনের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক প্রাথমিক পরীক্ষণে নিশ্চিত হবে। ভর্তুকির আবেদনপত্রের সাথে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো হতে সংযোজিত ছক মোতাবেক সনদপত্র দাখিল করতে হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে যেসকল ডকুমেন্ট ব্যাংক শাখা কর্তৃক প্রক্রিয়াকৃত হয় সেগুলোর যথার্থতা ও সেগুলোতে উল্লেখিত তথ্যাদির শুদ্ধতার বিষয়েও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখা নিশ্চিত হবে। প্রাথমিক পরীক্ষণে পরিলক্ষিত ত্রুটির/অসম্পূর্ণতার (যদি থাকে) বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা আবেদনপত্র প্রাপ্তির ০৩(তিন) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করবে।
(খ) আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতার সাথে আবেদনপত্রে উল্লিখিত রপ্তানির সামঞ্জস্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার লক্ষ্যে রপ্তানিকারক হতে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা/তথ্যাদি এবং রপ্তানি ও রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসন বিষয়ে ব্যাংক শাখার স্বীয় রেকর্ড হতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অন্য ব্যাংক শাখা হতে সংগৃহীত তথ্যাদি/সনদপত্র সংযোজনান্তে আবেদনপত্র পূর্ণাঙ্গ ও সম্পূর্ণ আকার প্রাপ্ত হওয়ার পর অনুমোদিত ডিলার পরিশোধযোগ্য অংক নিরূপন করবে। সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্র ফরমের অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখা কর্তৃক ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত অংশের নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
(গ) ভর্তুকির আবেদনপত্র মোতাবেক প্রদেয় অর্থের সঠিকতার বিষয়ে নিযুক্ত বহিঃনিরীক্ষক ফার্ম দ্বারা প্রতিটি আবেদনপত্র নিরীক্ষা করাতে হবে। নিরীক্ষা সম্পাদনের পর অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে রপ্তানি ভর্তুকি বাবদ পরিশোধ্য অর্থের দাবী প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের একাউন্টস এন্ড বাজেটিং বিভাগে ফরম-গ অনুযায়ী প্রেরণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড়কৃত ভর্তুকির প্রেক্ষিতে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধিত অর্থের বিবরণী ফরম-ঘ অনুসারে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে পরবর্তী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগে দাখিল করতে হবে।
(ঘ) প্রতিক্ষেত্রে ভর্তুকি পরিশোধ অনুমোদনের সংগে সংগে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন সনদপত্র (গাইডলাইন্স ফর ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন-২০০৯, ভলিউম-১ এর এপেন্ডিক্স-৫/২৩ অনুযায়ী), জাহাজীকরণের প্রমানস্বরূপ বিল অব লেডিং/এয়ারওয়ে বিল, কমার্শিয়াল ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট ও শুল্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রত্যয়নকৃত বিল অব এক্সপোর্ট এর ওপরে সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে ভর্তুকি পরিশোধিত মর্মে সীল এবং পরিশোধ অনুমোদনকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর যুক্ত করতে হবে, যাতে ঐ সকল দলিলাদি অপব্যবহারের সুযোগ না থাকে। একই রপ্তানির আওতায় একই সুবিধার জন্য একাধিকবার পিআরসি ইস্যূকৃত না হওয়ার বিষয়ে অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এছাড়াও এফ,ই সার্কুলার-৩১, তারিখ-ডিসেম্বর ২৭, ২০০১ এর নির্দেশনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকের রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত না থাকার বিষয়টি অনুমোদিত ডিলার ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন এক্সপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
(ঙ) ভর্তুকি পরিশোধ নিষ্পত্তি সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনের/সরকারী বাণিজ্যিক নিরীক্ষা বিভাগের পরীক্ষণের জন্য পরিশোধের তারিখ হতে অন্যূন ০৩(তিন) বছর পর্যন্ত শাখায় সংরক্ষণ করতে হবে।
(চ) রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে বা তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও অডিট ফার্ম, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো, টিসিবি ভবন, ১ কাওরান বাজার হতে পরামর্শ গ্রহণ করবে।
নিয়মবহির্ভূতভাবে ভর্তুকি পরিশোধের শাস্তিমূলক ব্যবস্থাদি:
(ক) বিধিবহির্ভূতভাবে ভর্তুকি পরিশোধ করা হলে পরিশোধকৃত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত পরিশোধকারী ব্যাংকের হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করা হবে।
(খ) সংঘটিত অনিয়মের সাথে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
ভর্তুকি বাবদ অর্থ পরিশোধ প্রক্রিয়া:
সরকারী বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে ছাড়কৃত তহবিল হতে ভর্তুকি বাবদ দাখিলকৃত আবেদনের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অনুকূলে অর্থ প্রদান করা হবে।
দ্রষ্টব্য: বিস্তারিত দেখতে সংযুক্ত পিডিএফ ফাইলটি ক্লিক করুন